আপনি আমি প্রায়শই শুনে থাকি যে না যেনে অথবা জ্যোতিষের কাছ থেকে পরামর্শ না নিয়ে রত্ন পাথর ব্যবহার করলে ক্ষতি হতে পারে। এবং এমন কারনে অনেকেই রত্নপাথর ব্যবহার করার সময় থেকেই মনে মনে ভয়ে থাকি, যদি না কোন ক্ষতি হয়ে যায়। এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আগে আমাদের জানা উচিৎ যে এমন কি কোন জ্যোতিষ রয়েছেন যিনি সঠিক পরামর্শের সাথে তার পরামর্শ অনুযায়ী রাশিরত্ন পাথরটি দেবার পরে নিশ্চয়তা দিতে পারবে যে সকল বিপদ কেটে যাবে এবং জীবনে উন্নতি হবে? আমার জানা মতে পারবে না। কারন রত্নপাথর ব্যবহারে উপকার পাওয়া নির্ভর করে আল্লাহ্র ইচ্ছা এবং মানুষের ভাগ্যর উপর। কারন আল্লাহ্ না চাইলে অনেক টাকা ব্যয় করে রত্নপাথর ব্যবহার করলেও কোন উপকার পাওয়া সম্ভব নয়।
রাশি রত্ন পাথরের ব্যবহার হয়ে থাকে তিন ভাবে। প্রথম ব্যবহার হয় আভিজাত্য, সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশে। দ্বিতীয়ত ব্যবহার হয় রাশি অনুযায়ী মানুষের উপকারের জন্য আর তৃতীয়ত ব্যবহার হয় কলকারখানায় বিভিন্ন পণ্য তৈরি করার জন্য। পৃথিবীর সকল ভালো মানের রত্ন পাথর ব্যবহার হয় আভিজাত্য ও সৌন্দর্য প্রকাশে। কারন খুব খুব ভালো মানের রত্ন পাথর সবাই ক্রয় করার সামর্থ্য রাখে না। যেমন হলিউড অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জলি এক জোড়া কলম্বিয়ান পান্না পাথরের কানের দুল কিনেছেন বাংলা টাকায় ২০ কোটি টাকা দিয়ে। ২০১৫ সালের মে মাসের ১২ তারিখে সুইজারল্যান্ড এর জেনেভায় একটি রুবি পাথর বিক্রি হয়েছে ২৫২ কোটি টাকায়। এই পান্না পাথরের কানের দুল এবং রুবি পাথর সারা পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি পাওয়া যাবেনা। তাই উৎকৃষ্ট মানের রত্ন পাথর কেনার জন্য শুধু অর্থ নয় সাথে সাথে সেই পরিমাণ আভিজাত্য ও সাহস থাকা চাই। এ ধরনের রত্ন পাথর যারা ক্রয় করেন তাড়া কোন প্রকারের জ্যোতিষী বিশ্বাস করে পরেন না।
স্বয়ং মহান আল্লাহ্তালা পবিত্র কোরআন শরীফের ৫৫ নং সূরা “আর-রহমান” এর ১৮ থেকে ২৩ নম্বর আয়াতে তার ক্ষমতা বুঝাতে প্রবাল এবং মুক্তা পাথরের কথা উল্লেখ করেছেন এবং মানুষ ও জীন জাতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন যে, আমরা মহান আল্লাহ্র কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবো? একই সূরায় ৫৪ থেকে ৫৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহতালা বেহেস্তের হুরদের কথা বলতে গিয়ে ৫৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন তারা যেন এক একটি প্রবাল ও রুবি পাথরের ন্যায় এবং ৫৯ নং আয়াতে মানুষ ও জীন জাতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন যে, আমরা মহান আল্লাহ্র কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবো? মহান আল্লাহ্ যেখানে রত্ন পাথরকে তার ক্ষমতা প্রকাশে নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন সেখানে আমরা মানুষ রত্ন পাথরকে খারাপ বলি কোন যুক্তিতে। আর যেখানে ভাগ্য বদলের জন্য রত্ন পাথর ব্যবহার করা হারাম সেখানে ইসলাম ধর্মে রত্ন পাথর সৌন্দর্যর জন্য ব্যবহারের নানান তথ্য পাওয়া যায়। তাই আপনি আমি যে কেও বিনা দ্বিধায় সৌন্দর্যর জন্য রত্ন পাথর ব্যবহার করতে পারি। কোন উপকার হবে কিনা সেটা আল্লাহ্ই ভালো জানেন।
রাশিরত্ন পাথর ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে এমন কথার গ্যারান্টি কেও দিতে পারবেনা। তবে আল্লাহ্র উপর ভরসা রেখে তার কাছে সাহায্য চেয়ে রত্নপাথর ব্যবহার করায় কোন সমস্যা নেই। যদি না যেনে রত্ন পাথর ব্যবহারে কোন ক্ষতির কিছু থাকতো তাহলে ইসলামধর্মে আভিজাত্য ও সৌন্দর্য প্রকাশে রত্নপাথরের ব্যবহার থাকতো না।