রত্ন পাথর কোন আঙ্গুলে ব্যবহার করতে হবে এমন প্রশ্ন আপনার মনে হরহামেশাই চলে আসে। অথবা দিন ক্ষণ সময় মেনে রত্ন পাথর ব্যবহারের কথা অনেকেই বলে থাকেন। এমন অনেকে আছেন যারা বলেই দেন এই পাথর এই আঙ্গুলেই ব্যবহার করবেন অথবা শনিবার এই পাথর রবিবার ঐ পাথর ব্যবহার করবেন। এমন সব নির্দেশনার কারনে আঙ্গুল ধরে আংটি ব্যবহার করতে গিয়ে রত্নপাথর ব্যবহারকারীদের মনে নানান প্রশ্নের জন্ম। অনেকে আবার সঠিক নিয়মে রত্ন পাথর ব্যবহার হচ্ছে কিনা সে বিষয় নিয়ে একরকম দুশ্চিন্তায় পড়ে থাকেন। পাছে ভুল ভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়াতে সমস্যা হয়।
আমাদের জানা মতে এমন অনেক জ্যোতিষ রয়েছেন যারা শুধু গলায় লকেট করে রত্ন পাথর বিক্রি করেন, কেও আবার হাতে বাজু করে পরতে বলেন, কেও কেও হাতের নির্দিষ্ট আঙ্গুলের কথা বলে দেন। যদি ঐ সকল জ্যোতিষদের নির্দেশ মত নির্দিষ্ট আঙ্গুলেই পাথর ব্যবহার করা হয় তাহলে যারা গলায়, কোমরে, বাহুতে পাথর ব্যবহার করতে বলেন তার নিশ্চয়ই ভুল। তাদের নিশ্চয়ই কোন উপকার হবার কথা নয়। অথবা যারা কোন দিন ক্ষণ মানেন নাই তাদেরও সব বৃথা হবার কথা। অথবা যদি শুধু আঙ্গুলেই পাথর ব্যবহার করতে হয় তাহলে নীলা, প্রবাল এবং গোমেদ পাথর ব্যবহারের জন্য তিনটি মধ্যমা আঙ্গুল কোথা থেকে পাওয়া যাবে?
রত্নপাথর ব্যবহারে মানুষের উপকার হবেই এমন কোন গ্যারান্টি কি কেও দিতে পারেন? অথবা জ্যোতিষের পরামর্শ অনুযায়ী তার কাছ থেকেই নির্দিষ্ট ওজনের নির্দিষ্ট কোয়ালিটির রত্নপাথর তার পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিন ক্ষণে ব্যবহার করলে কি উপকার পাওয়ার গ্যারান্টি পাওয়া যাবে? আমার তো মনে হয়না। রত্ন পাথর মাটির নিচে জমাট বাঁধা ক্যামিকেলের ছোট ছোট টুকরা ছাড়া আর কিছুই নয়। যেহেতু রত্নপাথর ক্যামিকেল তাই এর এক ধরনের প্রভাব থাকে মানুষের শরীরে। এ প্রভাবের ফলে কিছু মানুষ উপকার পায় আবার কিছু মানুষ কোন প্রকারের উপকার পান না। মহান আল্লাহ্তালা তার নেয়ামত হিসেবে রত্ন পাথরকে মাটির নিচে সৃষ্টি করেছেন। যখন কেও গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না যে দিনক্ষণ মেনে শোধন করে নির্দিষ্ট আঙ্গুলে রত্ন পাথর ব্যবহার করলেই ভাগ্য বদলে যাবে, তখন এত সব নিয়ম কেন সৃষ্টি হয়েছে তার উত্তর হয়তো জ্যোতিষরাই ভালো দিতে পারবেন।
আমাদের সকলের মনে রাখা উচিৎ যে রত্ন পাথর মানুষের ভাগ্য বদলাতে পারেনা। ভাগ্য বদলানোর মালিক আল্লাহ্। তিনি চাইলে সব সম্ভব। রত্ন পাথরতো একটি উছিলা। এমন কি ইসলাম ধর্মে কোথায় উল্লেখ নেই যে রত্ন পাথর মানুষের ভাগ্য বদলাতে পারে। আল্লাহ্র সৃষ্টি রত্নপাথর মানুষের জন্য নেয়ামত। যা তিনি পবিত্র কোরআন শরীফের ৫৫ নং সূরা “আর-রহমান” এ উল্লেখ করেছেন। আর এ নেয়ামত কাকে কতটুকু উপকার দেবে আর কাকে কিছুই দেবে না তার সব কিছুই আল্লাহ্র হাতে। আপনি যখন রত্ন পাথর ব্যবহার করবেন তখন সবার আগে খেয়াল রাখবেন রত্ন পাথরটি যেন আসল হয়। চেষ্টা করবেন যত টুকু সম্ভব ভালো কোয়ালিটির রত্ন পাথর ব্যবহার করার। এ বিষয়ে একটি কথা উল্লেখ করা ভালো যে, যত ভালো কোয়ালিটি তত ছোট রত্নপাথর ব্যবহার করা যায়। যেমন যত ভাল গুঁড় পরিমানে তত কম। এবং রত্ন পাথর ব্যবহারের সময় বিসমিল্লাহ্ বলে আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কিছু নেই। উপকার করলে আল্লাহ্ই করবেন। তাই সকল সময় তার কাছেই চাইতে হবে।
রত্ন পাথর ব্যবহারে আপনি মুক্ত, আপনি যেখানে খুশী পাথর ব্যবহার করতে পারবেন এবং যখন খুশী। মাঝে মাঝে মনে হয় নানান জ্যোতিষীয় নিয়ম কানুনের মাঝে আসলে রত্ন পাথরের কোন মূল্য নেই, যা মূল্য রয়েছে সব ঐ সকল নানান নিয়ম কানুনের।